বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ৪৩ জন সিনেটর ও এমপি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠিয়েছেন। বুধবার ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠানো এ চিঠিতে তাঁরা বাংলাদেশের আগামী রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তিনটি স্পষ্ট দাবি উত্থাপন করেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অবিলম্বে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে হবে। একইসাথে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্ত করতে হবে। তাঁদের মতে, এসব বিষয়ে দেরি বা অস্পষ্টতা জনসাধারণের মধ্যে অনাস্থা বাড়াবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এই মুহূর্তে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার এক ঐতিহাসিক সুযোগ পেয়েছে। তাঁরা মনে করেন, গত জুলাইয়ের রাজনৈতিক ঘটনা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
চিঠিতে অস্ট্রেলিয়ান আইনপ্রণেতারা নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা ও রোডম্যাপ প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দেন এবং পূর্ববর্তী সরকারের সময় সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। তাঁরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রয়টার্স এবং জাতিসংঘের রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, পূর্বের সরকার আমলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের বহু অভিযোগ রয়েছে।
বিশেষভাবে র্যাব প্রসঙ্গে তাঁরা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বাহিনীটি প্রায় ২৭০০ বেআইনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে এবং এ কারণে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। এই বাহিনী বিলুপ্ত করে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ান সরকারকেও একই রকম ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
চিঠির শেষাংশে তাঁরা বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই এবং এতে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দমনমূলক আচরণ পরিহার করতে হবে।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রত্যাশাও তুলে ধরে তাঁরা বলেন, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হোক—এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।
স্বাক্ষরকারী সিনেটরদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন লারিসা ওয়াটার্স, ফাতিমা পেম্যান, মেহরিন ফারুকি, বারবারা পোকক, এমপি টিম রিড, গ্যাব্রিয়েল ডি ভিয়েট্রি ও ড. রোজালি উডরাফ।
Leave a Reply